Author: বাংলা কবিতা

যেদিন তুমি আপনি ছিলে একা আপনাকে তো হয় নি তোমার দেখা। সেদিন কোথাও কারো লাগি ছিল না পথ-চাওয়া; এপার হতে ওপার বেয়ে বয় নি ধেয়ে কাঁদন-ভরা বাঁধন-ছেঁড়া হাওয়া। আমি এলেম, ভাঙল তোমার…

নিত্য তোমার পায়ের কাছে তোমার বিশ্ব তোমার আছে কোনোখানে অভাব কিছু নাই। পূর্ণ তুমি, তাই তোমার ধনে মানে তোমার আনন্দ না ঠেকে। তাই তো একে একে যা-কিছু ধন তোমার আছে আমার ক’রে…

আজ এই দিনের শেষে সন্ধ্যা যে ওই মানিকখানি পরেছিল চিকন কালো কেশে গেঁথে নিলেম তারে এই তো আমার বিনিসুতার গোপন গলার হারে। চক্রবাকের নিদ্রানীরব বিজন পদ্মাতীরে এই সে সন্ধ্যা ছুঁইয়ে গেল আমার…

জানি আমার পায়ের শব্দ রাত্রে দিনে শুনতে তুমি পাও, খুশি হয়ে পথের পানে চাও। খুশি তোমার ফুটে ওঠে শরৎ-আকাশে অরুণ-আভাসে। খুশি তোমার ফাগুনবনে আকুল হয়ে পড়ে ফুলের ঝড়ে ঝড়ে। আমি যতই চলি…

আমার মনের জানলাটি আজ হঠাৎ গেল খুলে তোমার মনের দিকে। সকালবেলার আলোয় আমি সকল কর্ম ভুলে রইনু অনিমিখে। দেখতে পেলেম তুমি মোরে সদাই ডাক যে-নাম ধ’রে সে-নামটি এই চৈত্রমাসের পাতায় পাতায় ফুলে…

আজ প্রভাতের আকাশটি এই শিশির-ছলছল, নদীর ধারের ঝাউগুলি ওই রৌদ্রে ঝলমল, এমনি নিবিড় করে এরা দাঁড়ায় হৃদয় ভরে তাই তো আমি জানি বিপুল বিশ্বভুবনখনি অকূল মানস-সাগরজলে কমল টলমল। তাই তো আমি জানি…

সন্ধ্যারাগে ঝিলিমিলি ঝিলমের স্রোতখানি বাঁকা আঁধারে মলিন হল–যেন খাপে-ঢাকা বাঁকা তলোয়ার; দিনের ভাঁটার শেষে রাত্রির জোয়ার এল তার ভেসে-আসা তারাফুল নিয়ে কালো জলে; অন্ধকার গিরিতটতলে দেওদার তরু সারে সারে; মনে হল সৃষ্টি…

সর্বদেহের ব্যাকুলতা কী বলতে চায় বাণী, তাই আমার এই নূতন বসনখানি। নূতন সে মোর হিয়ার মধ্যে দেখতে কি পায় কেউ। সেই নূতনের ঢেউ অঙ্গ বেয়ে পড়ল ছেয়ে নূতন বসনখানি। দেহ-গানের তান যেন…

এইক্ষণে মোর হৃদয়ের প্রান্তে আমার নয়ন-বাতায়নে যে-তুমি রয়েছ চেয়ে প্রভাত-আলোতে সে-তোমার দৃষ্টি যেন নানা দিন নানা রাত্রি হতে রহিয়া রহিয়া চিত্তে মোর আনিছে বহিয়া নীলিমার অপার সংগীত, নিঃশব্দের উদার ইঙ্গিত। আজি মনে…

যে-কথা বলিতে চাই, বলা হয় নাই, সে কেবল এই– চিরদিবসের বিশ্ব আঁখিসম্মুখেই দেখিনু সহস্রবার দুয়ারে আমার। অপরিচিতের এই চির পরিচয় এতই সহজে নিত্য ভরিয়াছে গভীর হৃদয় সে-কথা বলিতে পারি এমন সরল বাণী…