আমি নহি পুরূরবা। হে উর্বশী, ক্ষনিকের মরালকায় ইন্দ্রিয়ের হর্ষে, জান গড়ে তুলি আমার ভুবন? এসো তুমি সে ভুবনে, কদম্বের রোমাঞ্চ ছড়িয়ে। ক্ষণেক সেখানে থাকো, তোমার দেহের হায় অন্তহীন আমন্ত্রণবীথি ঘুরি যে সময় নেই- শুধু তুমি থাকো ক্ষণকাল, ক্ষণিকের আনন্দাঅলোয় অন্ধকার আকাশসভায় নগ্নতায় দীপ্ত তনু জ্বালিয়ে যাও নৃত্যময় দীপ্ত দেয়ালিতে। আর ...
Read More »এবং লখিন্দর! – বিষ্ণুদে
হৃদয় তোমাকে পেয়েছি, স্রোতস্বিনী! তুমি থেকে থেকে উত্তাল হয়ে ছোটো, কখনো জোয়ারে আকণ্ঠ বেয়ে ওঠো তোমার সে-রূপ বেহুলার মতো চিনি। তোমার উৎসে স্মৃতি করে যাওয়া আসা মনে-মনে চলি চঞ্চল অভিযানে, সাহচর্যেই চলি, নয় অভিমানে, আমার কথায় তোমারই তো পাওয়া ভাষা। রক্তের স্রোতে জানি তুমি খরতোয়া, ঊর্মিল জলে পেতেছি আসনপিঁড়ি, থৈথৈ ...
Read More »তিনটি কাঠবিড়ালী – বিষ্ণুদে
অনেক দিনের অনেক যত্নে কমিয়েছি সন্ত্রাস। এদিকে আমার ছুটি শেষ হ’ল প্রায়, আজ তিনটেতে গাছ থেকে নেমে বসেছিলো জানলায়। এত ভীরু এত বিনীত কেন যে! এরাই তো ছিল খাস সমুদ্র-জয়ী সীতা-সন্ধানী সেতুবন্ধের সঙ্গী; দীন সজ্জন সাহসী উত্সাহিত মজুরেরই মত ভঙ্গী। এরা কেন ভয়ে ডালে-ডালে ঘোরে আজ? এরা কোনও কালে করেনি ...
Read More »ইলোরা-বিষ্ণু দে
আকাশে তোমার মুক্তি; ? যে কৈলাশ বেঁধেছ ভাস্কর তোমার উর্মিল নৃত্যে, নীলিমা সে নৃত্যের সঙ্গিনী ; সেখানে নেইকো সোনা কৌটিল্যের নেই বিকিকিনি, সেখানে শূণ্যের চোখে সম্পূর্ণতা স্বাধীন, ভাস্বর | সে-দক্ষযজ্ঞের নাটে স্থিতি কাঁপে সংহারে-সংহারে, রাজসূয় অসূয়ার যুগ গত কুমার সম্ভবে ; নটরাজ সর্বহারা নীলকণ্ঠ গালবাদ্যরবে পায়ে-পায়ে পৃথ্বী জাগে সতী তোলে ...
Read More »অন্ধকারে আর – বিষ্ণু দে
অন্ধকারে আর রেখো না ভয়, আমার হাতে ঢাকো তোমার মুখ দু-চোখে দিয়ে দাও দুঃখ সুখ, দু-বাহু ঘিরে গড়ো তোমার জয়, আমার তালে গাঁথো তোমার লয় | অসহ আলো আজ ঘৃণায় দগ্ধ, দূষিত দিনে আর নেইকো রুচি, অন্ধকারই একমাত্র শুচি,প্রেমের নহবত ঘৃণায় স্তব্ ধ | আমার হাতে ঢাকো তোমার মুখ ||
Read More »আলেখ্য-বিষ্ণু দে
আঁটসাঁট বেঁধে আচল জড়ালো কোমরে, মুগ্ধ চোখের এক নিমেষের দেরিতে লঘু লাবণ্যে লাফ দিয়ে হল পার | কালো পাহাড়ের গায় চমকাল রেখা, শাড়ির শাদায় কস্তাপাড়ের সিঁদুরে কষ্টিতে ঋজু কোমল শরীরে তরল স্রোতের ছন্দ | এই লাবণ্যে এই নিশ্চিত ছন্দে আমরা সবাই কেনইবা পার হব না সামনের এই পাহাড়ের খাড়া খন্দ ...
Read More »সে কবে-বিষ্ণু দে
সে কবে গেয়েছি আমি তোমার কীর্তনে কৃতার্থ দোহার | পদাবলী ধুয়ে গেছে অনেক শ্রাবণে ; স্মৃতি আছে তার | রৌদ্র-জলে সেই-স্মৃতি মরে না, আয়ু যে দুরন্ত লোহার | শুধু লেগে আছে মনে ব্যথার স্নায়ুতে মর্চের বাহার ||
Read More »ঘোরসাওয়ার-বিষ্ণু দে
জন সমুদ্রে নেমেছে জোয়ার, হৃদয় আমার চড়া | চোরাবালি আমি দূর দিগন্তে ডাকি— কোথায় ঘোড়সওয়ার? দীপ্ত বিশ্ববিজয়ী! বর্শা তোলো | কোন ভয়? কেন বীরের ভরসা ভোলো? নয়নে ঘনায় বারে বারে ওঠাপড়া? চোরাবালি আমি দূর দিগন্তে ডাকি?হৃদয় আমার চড়া? অঙ্গে রাখিনা কারোই অঙ্গিকার? চাঁদের আলোয় চাঁচর বালির চড়া | এখানে কখনো ...
Read More »ভিড় – বিষ্ণু দে
নানামুনি দেয় নানাবিধ মত মন্বন্তর আসে! তবুও শহরে ওসারে বহরে জড়কবন্ধ ভিড়! বহু সাপ্লাই উঠে গেল শুনি, তবু আজো লাগে চিড় পদাতিক পথে, ট্রামে কারে ট্রাকে করে বিড়বিড় দরকারী বিনাদরকরী কেউ সরকারী চোরাকারবারী ফ’ড়ে আমীর ওমরা মজুতদারের পাশে আমরা সবাই-তুমি আর আমি মৃত্যুর প্রতিভাসে মিশে যাই,-জানি মিথ্যা নেহাত্; দুর্বার জীবনের ...
Read More »গার্হাস্থ্যাশ্রম (পূর্বরঙ্গ) – বিষ্ণু দে
তোমায় লেগেছে ভালো – সে-কথা তো জানো ? তোমার ও কটা চোখ – যদিচ বাঙালি, বুধবার থেকে কেন মনে পড়ে খালি ! লোকে যাকে প্রেম বলে – সে কি তুমি মানো ? জেনে-শুনে চোখ দিয়ে আমাকে কি টানো ? না কি তুমি অজানিতে ভরে যাও ডালি ? না কি আমি ...
Read More »