আমি নহি পুরূরবা। হে উর্বশী, ক্ষনিকের মরালকায় ইন্দ্রিয়ের হর্ষে, জান গড়ে তুলি আমার ভুবন? এসো তুমি সে ভুবনে, কদম্বের রোমাঞ্চ ছড়িয়ে। ক্ষণেক সেখানে থাকো, তোমার দেহের হায় অন্তহীন আমন্ত্রণবীথি ঘুরি যে সময়…
বিষ্ণু দে
বিষ্ণু দে( Bisnu De ): বিষ্ণু দে একাধারে আধুনিক বাঙালি কবি, গদ্যাকার, অনুবাদক, , প্রাবন্ধিক, চিত্রসমালোচক ও শিল্পানুরাগী। তিনি ১৯০৯ সালের ১৮ জুলাই কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তাদের আদিনিবাস ছিল হাওড়ায়। রবীন্দ্রোত্তর বাংলা কবিতায় বিষ্ণু দে এর অবদান বাংলা সাহিত্যে একটি উল্লেখযোগ্য। ‘স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ’ গ্রন্থটির জন্য তিনি ভারতের সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার ‘জ্ঞানপীঠ’ লাভ করেন। বিষ্ণু দে ত্রিশোত্তর বাংলা কবিতার নব্যধারার আন্দোলনের প্রধান ৫ জন কবির অন্যতম ছিলেন। প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী মান্না দের কফি হাউজের সেই আড্ডাটা আর নেই গানের কলিতেও স্থান করে নিয়েছেন বিষ্ণু দে। তার কবিতা (kobita) ছিল অন্যদের থেকে কিছুটা আলাদা ধরনের। উর্বশী, তিনটি কাঠবিড়ালী, বাংলাই আমাদের, সুজলা সুফলা, মনে হয় প্রত্যেকে লেনিন ইত্যাদি তার বিখ্যাত কবিতা (Poem)। তিনি ১৯৮২ সালের ৩ ডিসেম্বর কোলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।
এবং লখিন্দর! – বিষ্ণুদে
হৃদয় তোমাকে পেয়েছি, স্রোতস্বিনী! তুমি থেকে থেকে উত্তাল হয়ে ছোটো, কখনো জোয়ারে আকণ্ঠ বেয়ে ওঠো তোমার সে-রূপ বেহুলার মতো চিনি। তোমার উৎসে স্মৃতি করে যাওয়া আসা মনে-মনে চলি চঞ্চল অভিযানে, সাহচর্যেই চলি,…
তিনটি কাঠবিড়ালী – বিষ্ণুদে
অনেক দিনের অনেক যত্নে কমিয়েছি সন্ত্রাস। এদিকে আমার ছুটি শেষ হ’ল প্রায়, আজ তিনটেতে গাছ থেকে নেমে বসেছিলো জানলায়। এত ভীরু এত বিনীত কেন যে! এরাই তো ছিল খাস সমুদ্র-জয়ী সীতা-সন্ধানী সেতুবন্ধের…
ইলোরা-বিষ্ণু দে
আকাশে তোমার মুক্তি; ? যে কৈলাশ বেঁধেছ ভাস্কর তোমার উর্মিল নৃত্যে, নীলিমা সে নৃত্যের সঙ্গিনী ; সেখানে নেইকো সোনা কৌটিল্যের নেই বিকিকিনি, সেখানে শূণ্যের চোখে সম্পূর্ণতা স্বাধীন, ভাস্বর | সে-দক্ষযজ্ঞের নাটে স্থিতি…
অন্ধকারে আর – বিষ্ণু দে
অন্ধকারে আর রেখো না ভয়, আমার হাতে ঢাকো তোমার মুখ দু-চোখে দিয়ে দাও দুঃখ সুখ, দু-বাহু ঘিরে গড়ো তোমার জয়, আমার তালে গাঁথো তোমার লয় | অসহ আলো আজ ঘৃণায় দগ্ধ, দূষিত…
আলেখ্য-বিষ্ণু দে
আঁটসাঁট বেঁধে আচল জড়ালো কোমরে, মুগ্ধ চোখের এক নিমেষের দেরিতে লঘু লাবণ্যে লাফ দিয়ে হল পার | কালো পাহাড়ের গায় চমকাল রেখা, শাড়ির শাদায় কস্তাপাড়ের সিঁদুরে কষ্টিতে ঋজু কোমল শরীরে তরল স্রোতের…
সে কবে-বিষ্ণু দে
সে কবে গেয়েছি আমি তোমার কীর্তনে কৃতার্থ দোহার | পদাবলী ধুয়ে গেছে অনেক শ্রাবণে ; স্মৃতি আছে তার | রৌদ্র-জলে সেই-স্মৃতি মরে না, আয়ু যে দুরন্ত লোহার | শুধু লেগে আছে মনে…
ঘোরসাওয়ার-বিষ্ণু দে
জন সমুদ্রে নেমেছে জোয়ার, হৃদয় আমার চড়া | চোরাবালি আমি দূর দিগন্তে ডাকি— কোথায় ঘোড়সওয়ার? দীপ্ত বিশ্ববিজয়ী! বর্শা তোলো | কোন ভয়? কেন বীরের ভরসা ভোলো? নয়নে ঘনায় বারে বারে ওঠাপড়া? চোরাবালি…
ভিড় – বিষ্ণু দে
নানামুনি দেয় নানাবিধ মত মন্বন্তর আসে! তবুও শহরে ওসারে বহরে জড়কবন্ধ ভিড়! বহু সাপ্লাই উঠে গেল শুনি, তবু আজো লাগে চিড় পদাতিক পথে, ট্রামে কারে ট্রাকে করে বিড়বিড় দরকারী বিনাদরকরী কেউ সরকারী…
গার্হাস্থ্যাশ্রম (পূর্বরঙ্গ) – বিষ্ণু দে
তোমায় লেগেছে ভালো – সে-কথা তো জানো ? তোমার ও কটা চোখ – যদিচ বাঙালি, বুধবার থেকে কেন মনে পড়ে খালি ! লোকে যাকে প্রেম বলে – সে কি তুমি মানো ?…