শক্তি চট্টোপাধ্যায়

এখন সন্ন্যাসী দুইজন– একজন আমি আর অন্যজন আমার পিতার মমতাবিহীন চক্ষু মাঝেমধ্যে রাত্রে দেন দেখা যখন একাকী আমি একা মাঝেমধ্যে রাত্রে দেন দেখা কেন তাঁর নামত সন্ন্যাস কেন তিনি মাত্র মায়াহীন মনে…

চন্দনের ধূপ আমি কবে পুড়িয়েছি মনে নেই। মন আর স্মৃতিগুলি ধরে না আদরে। সংশ্লিষ্ট চন্দন এই অবহেলা সহ্য করে গেছে। কখনো বলেনি কিছু, বলেনি বলেই পরিত্রাণ পেয়েছে সহজে, নয়তো অসহ্য কুঠারে ধ্বংস…

সাড়ে ছয় হাতে দেহ জড়াবে নিশ্চয়, থানকাপড়ের গন্ধ আর জাগাবে না মৃত্যু নয়, প্রসঙ্গত মূর্ছা মনে হবে। কিছু কাঠকুটো আমি উঠোনে রেখেছি কাচের বয়ামে আছে পুরাতন ঘৃত তাহলে তো মূর্ছা নয়, মানুষটি…

দিনরাত মৃত্যু চলে সন্তান অবধি। দেখা তো হয়েছে ক্রূর যমের সহিত, তাকে বলা গেছে, আমি একাকীই যাবো। গঙ্গার তরঙ্গভঙ্গে নিভে যাবে আলো, আমি যাবো, সঙ্গে নিয়ে যাবো না কারুকে একা যাবো দিনরাত…

একটি চেনা পাথর পড়ে আছে পরনে তার অসংখ্য মৌমাছি ভিতরে মৌ–কী জানি কার কাছে ভালোবাসার অমল মালাগাছি? একটি চেনা পাথর পড়ে আছে পাথর, ওকে নাম দিয়েছি ওরা ভয় ক’রে তার শক্তি আগাগোড়াই…

দুঃখকে তোমার কোনো ভয় নেই, সেও ভালোবাসে ভালোবাসা থেকে তুমি ভয় পাও? সুখ থেকে পাও? উল্লেখযোগ্যতা যদি নিয়ে যায় সমুদ্রের তীরে– সেখানে তোমার ভয় আছে নাকি? আনন্দও আছে? তীরে সারবন্দী গাছ, সেখানে…

ভালো, এই ভালো, এই সম্পর্কে জটিল হাওয়া লাগা। কতদিনে হবে? মুক্তি, ওই তার ছিঁড়ে দেয়াল ডিঙিয়ে ভেঙে নয় কোনকিছু, শক্তি ভেঙে নয় সম্মুখে সর্বস্ব বাধা–তাও ভেঙে নয় শুধু ডানা পেলে উড়ে অথবা…

বেজে ওঠে দূর টেলিফোনে কাঁটাতার ওদিকে যেও না তুমি আর ওদিকে যেও না তুমি আর। আছো তুমি ভালো! দুইটি বিড়াল শাদা-কালো আছে দুই হাতে কথা হবে তোমাতে-আমাতে। সে-কথা কি আজো মনে পড়ে?…

ইচ্ছে ছিলো তোমার কাছে ঘুরতে-ঘুরতে যাবোই আমার পুবের হাওয়া। কিন্তু এখন যাবার কথায় কলম খোঁজে অস্ত্র কোথায় এবং এখন তোমার পাশে দাঁড়িয়ে-থাকা কুঞ্জলতায় রক্তমাখা চাঁদ ঢেকেছে আকুল চোখ ও মুখের মলিন আজকে…