বইয়ের উপর থেকে ধুলো মুছে নিলে আরো ধুলো রয়ে যায় অক্ষরের স্থাপত্যকে ঘিরে। ফলে ব্যাঙই সাপ খায় গিলে। মানুষ যেযার মতো চোখে-ধুলো ব্যাখ্যা দিতে জানে, সূর্য, শিল্প, শ্রম, শান্তি, শস্য বা সংহতি…
বাংলা কবিতা (কবিদের তালিকা অনুযায়ী)
বাংলা কবিতা
অনেক বছর পরে __পূর্ণেন্দু পত্রী
অনেক বছর পরে তোর কাছে এসেছি, মল্লিকা! বহুদিন আপিসের কাজে-কন্মে ডুবুরির মতো বহুদি মেশিনের যন্ত্রপাতি হয়ে বহুদিন বাবুদের গাড়ির টায়ার হয়ে সুদুরে ছিলাম। তোর পাশে চাঁপা ছিল, টগর, ঝুমকো-জবা ছিল। তারা কই…
দুঃখ দিয়েছিলে তুমি __পূর্ণেন্দু পত্রী
দুঃখ দিয়েছিলে তুমি আবার লাইটারও দিয়েছিলে। বোতাম ছিড়ে আমাকে লগ্ন করেছো তুমি আবার বুনে দিয়েছো নাইলনের সবুজ জামা। কমলালেবু নিংড়ে নিংড়ে বানানো সরবৎ ভিতরে মিশিয়ে দিলে গোপন কান্নাকাটি স্মৃতির পেস্তা-বাদাম সেই সরবৎ…
সেই গল্পটা – পূর্ণেন্দু পত্রী
আমার সেই গল্পটা এখনো শেষ হয়নি। শোনো। পাহাড়টা, আগেই বলেছি ভালোবেসেছিল মেঘকে আর মেঘ কী ভাবে শুকনো খটখটে পাহাড়টাকে বানিয়ে তুলেছিল ছাব্বিশ বছরের ছোকরা সে তো আগেই শুনেছো। সেদিন ছিল পাহাড়টার জন্মদিন।…
কেবল আমি হাত বাড়ালেই __পূর্ণেন্দু পত্রী
হাওয়া তোমার আঁচল নিয়ে ধিঙ্গীনাচন করলো খেলা সকাল বিকেল সন্ধেবেলা চোখের খিদের আশ মেটালো লস্পটে রোদ রাস্তা ঘাটে যখন হাঁটো সঙ্গে হাঁটে বনের পথে হাঁটলে যখন কাঁটাগাছে টানলে কাপড় চ্যাংড়া ছোঁড়ার ফাজলামিকে…
তাজমহল ১৯৭৫ __পূর্ণেন্দু পত্রী
বহুদিন একভাবে শুয়ে আছো, ভারতসম্রাট। বহুদিন মণিমুক্তো, মহফিল, তাজা ঘোড়া, তরুণ গোলাপ এবং স্থাপত্য নিয়ে ভাঙাগড়া সব ভুলে আছো। সর্বান্তঃকরণ প্রেম, যা তোমার সর্বোচ্ছ মুকুট, তাও ভুলে গেছো নাকি? পাথরের ঢাকনা খুলে…
পাওয়া না-পাওয়ার কানামাছি __পূর্ণেন্দু পত্রী
রঙীন রুমালে চোখ দুটো বাঁধা নিজের সঙ্গে নিজের অষ্টপ্রহর- কানামাছি খেলা ভারী চমৎকার ধাঁধা। যাকে ছোঁবার তাকে না ছুঁয়ে আকাশ ধরতে হাত বাড়িয়ে আমি ধুলো মাটির ভূয়ে। হাত বাড়ালে হাতে জলের বদলে…
যে টেলিফোন আসার কথা – পূর্ণেন্দু পত্রী
যে টেলিফোন আসার কথা সে টেলিফোন আসেনি। প্রতীক্ষাতে প্রতীক্ষাতে সূর্য ডোবে রক্তপাতে সব নিভিয়ে একলা আকাশ নিজের শূণ্য বিছানাতে। একান্তে যার হাসির কথা হাসেনি। যে টেলিফোন আসার কথা আসেনি। অপেক্ষমান বুকের ভিতর…
আমিই কচ আমিই দেবযানী __পূর্ণেন্দু পত্রী
একটা দিকে খাট পালঙ্ক, আরেকদিকে ঘাম মধ্যিখানে যজ্ঞে জলে কাঠ এক পা ছেঅটে ভুবন জুড়ে দিগ্নজয়ী ঘোড়া আরেক পায়ে জড়ানো চৌকাঠ। তুলতে যাই ভোরের ফুল শিশিরকণাসহ অগ্নিকণা লাফিয়ে ওঠে হাতে ফর্সা রোদে…
বিষন্ন জাহাজ __পূর্ণেন্দু পত্রী
আমরা যেখানে বসেছিলাম তার পায়ের তলায় ছিল নদী নদীতে ছিল নৌকা আর দূরে একটা বিষন্ন জাহাজ। আমি যখন তোমার তুমি যখন আমার ঠোঁটে বুনে দিচ্ছিলে যাবজ্জীবনের সুখ ঠিক সেই সময়ে ডুকরে কেঁদে…