একটা ছেলে যখন একটা মেয়েকে নক দেয়, প্রথম দুই একদিন মেয়েটি কিছু না বললেও কয়েকদিন যেতেই মেয়েটি ছেলেটির সাথে খারাপ ব্যবহার শুরু করে দেবে, অপমান করবে, রাগ দেখাবে অথবা ছেলেটির কোনো কথার আর কোনো উত্তর দেবে না। একটা ভদ্র ছেলে কোনোভাবেই এই অপমান সহ্য করতে পারবে না। সে রাগে ঐ ...
Read More »সুভা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
মেয়েটির নাম যখন সুভাষিণী রাখা হইয়াছিল তখন কে জানিত সে বোবা হইবে। তাহার দুটি বড়ো বোনকে সুকেশিনী ও সুহাসিনী নাম দেওয়া হইয়াছিল, তাই মিলের অনুরোধে তাহার বাপ ছোটো মেয়েটির নাম সুভাষিণী রাখে। এখন সকলে তাহাকে সংক্ষেপে সুভা বলে।দস্তুরমত অনুসন্ধান ও অর্থব্যয়ে বড়ো দুটি মেয়ের বিবাহ হইয়া গেছে, এখন ছোটোটি পিতামাতার ...
Read More »স্বামী – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
সৌদামিনী নামটা আমার বাবার দেওয়া। আমি প্রায়ই ভাবি, আমাকে এক বছরের বেশি ত তিনি চোখে দেখে যেতে পাননি, তবে এমন করে আমার ভিতরে বাহিরে মিলিয়ে নাম রেখে গিয়েছিলেন কি করে? বীজমন্ত্রের মত এই একটি কথায় আমার সমস্ত ভবিষ্যৎ-জীবনের ইতিহাসটাই যেন বাবা ব্যক্ত করে গেছেন। রূপ? তা আছে মানি; কিন্তু না ...
Read More »বিলাসী – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
পাকা দুই ক্রোশ পথ হাঁটিয়া স্কুলে বিদ্যা অর্জন করিতে যাই। আমি একা নই—দশ-বারোজন। যাহাদেরই বাটী পল্লীগ্রামে, তাহাদেরই ছেলেদের শতকরা আশি জনকে এমনি করিয়া বিদ্যালাভ করিতে হয়। ইহাতে লাভের অঙ্কে শেষ পর্যন্ত একেবারে শূন্য না পড়িলেও, যাহা পড়ে, তাহার হিসাব করিবার পক্ষে এই কয়টা কথা চিন্তা করিয়া দেখিলেই যথেষ্ট হইবে যে, ...
Read More »হৈমন্তী – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কন্যার বাপ সবুর করিতে পারিতেন, কিন্তু বরের বাপ সবুর করিতে চাহিলেন না। তিনি দেখিলেন, মেয়েটির বিবাহের বয়স পার হইয়া গেছে, কিন্তু আর কিছুদিন গেলে সেটাকে ভদ্র বা অভদ্র কোনো রকমে চাপা দিবার সময়টাও পার হইয়া যাইবে। মেয়ের বয়স অবৈধ রকমে বাড়িয়া গেছে বটে, কিন্তু পণের টাকার আপেক্ষিক গুরুত্ব এখনো তাহার ...
Read More »বিরহ – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (অনুপমার প্রেম-পর্ব-১)
একাদশবর্ষ বয়ঃক্রমের মধ্যে অনুপমা নবেল পড়িয়া পড়িয়া মাথাটা একেবারে বিগড়াইয়া ফেলিয়াছে। সে মনে করিল, মনুষ্য-হৃদয়ে যত প্রেম, যত মাধুরী, যত শোভা, যত সৌন্দর্য, যত তৃষ্ণা আছে, সব খুঁটিয়া বাছিয়া একত্রিত করিয়া নিজের মস্তিষ্কের ভিতর জমা করিয়া ফেলিয়াছে; মনুষ্য-স্বভাব, মনুষ্য-চরিত্র তাহার নখদর্পণ হইয়াছে। জগতের শিখিবার পদার্থ আর তাহার কিছুই নাই; সব ...
Read More »ভালবাসার ফল – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (অনুপমার প্রেম-পর্ব-২)
বিবাহ – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (অনুপমার প্রেম-পর্ব-৩)
আজ ৫ই বৈশাখ। অনুপমার বিবাহ-উৎসবে আজ গ্রামটা তোলপাড় হইতেছে। জগবন্ধুবাবুর বাটীতে আজ ভিড় ধরে না। কত লোক যাইতেছে, কত লোক হাঁকাহাঁকি করিতেছে। কত খাওয়ান-দাওয়ানর ঘটা, কত বাজনা-বাদ্যের ধুম। যত সন্ধ্যা হইয়া আসিতে লাগিল, ধুমধাম তত বাড়িয়া উঠিতে লাগিল; সন্ধ্যা-লগ্নেই বিবাহ, এখনই বর আসিবে—সকলেই উৎসাহে আগ্রহে উন্মুখ হইয়া আছে। কিন্তু বর ...
Read More »বৈধব্য – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (অনুপমার প্রেম-পর্ব-৪)
তথাপি অনুপমা একটু কাঁদিল। স্বামী মরিলে বাঙালীর মেয়েকে কাঁদিতে হয়, তাই কাঁদিল। তাহার পর স্ব-ইচ্ছায় সাদা পরিয়া সমস্ত অলঙ্কার খুলিয়া ফেলিল। জননী কাঁদিতে কাঁদিতে বলিলেন, “অনু, তোর এ বেশ ত আমি চোখে দেখতে পারি না, অন্তত হাতে একজোড়া বালাও রাখ।” “তা হয় না, বিধবার অলঙ্কার পরতে নেই।” “কিন্ত তুই কচি ...
Read More »চন্দ্রবাবুর সংসার – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (অনুপমার প্রেম-পর্ব-৫)
তিন বৎসর পরে খালাস হইয়াও ললিতমোহন বাড়ি ফিরিল না। কেহ বলিল, লজ্জায় আসিতেছে না। কেহ বলিল, সে গ্রামে কি আর মুখ দেখাতে পারে? ললিতমোহন নানা স্থান পরিভ্রমন করিয়া দুই বৎসর পরে সহসা একদিন বাটীতে আসিয়া উপস্থিত হইল। তাহার জননী আনন্দে পুত্রের শিরশ্চুম্বন করিয়া আর্শীবাদ করিলেন—“বাবা, এবার বিবাহ করে সংসারী হও, ...
Read More »