-নন্দিনী! আমার খুব ভয় করে ,বড় ভয় করে!
কোনও একদিন বুঝি জ্বর হবে ,দরজা দালান ভাঙ্গা জ্বর
তুষার পাতের মত আগুনের ঢল নেমে এসে
নিঃশব্দে দখল করে নেবে এই শরীরের শহর বন্দর।
বালিশের ওয়াড়ের ঘেরাটোপ ছিঁড়ে ফেলা তুলো
এখন হয়েছে মেঘ,উঁড়ো হাস, সাঁদা কবুতর।
সেই ভাবে জ্বর এসে আমাকে উড়িয়ে নিয়ে যাবে অন্য কোন ভুমন্ডলে
নন্দিনী! আমার খুব ভয় করে ,বড় ভয় করে।
– বাজে কথা বকে বকে কি যে সুখ পাও শুভঙ্কর।
সত্যি বুঝি না।
কার জন্যে ছুরি নিয়ে খেলায় মেতেছো?
তুমি কি আমার চোখে রক্তদৃশ্য এঁকে দিতে চাও?
– ছুরি কই? ছুরি ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছি জঙ্গলে
খাঁ খাঁ দুপুরের মত লম্বা ছুরি ছিল বটে কিছুদিন আগে।
তখন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল
তখন যে যুদ্ব দাঙ্গা লুটপাট ডাকাতির সম্ভাবনা ছিল
এখন ভীষন ভয় ছাড়া অন্য কোন প্রতিপক্ষ নেই ।
যুদ্ব নেই কামানের তোপ নেই , অসুখ বিসুখ কিছু নেই
ভয় ছাড়া অন্য কোন বীজানুর মারাত্মক আক্রমন নেই ।
– আমার যা কিছু ছিল সবই তো দিয়েছি,শুভঙ্কর।
তোমার বাঘের থাবা তাও ভরে দিয়েছি খাবারে।
চাঁদোয়ার মত ঘন বৃক্ষ ছায়া টাঙ্গিয়ে দিয়েছি
মাথার উপরে,ঠিক আকাশের মাপে মাপে বুনে।
তবুও তোমার এত ভয়?
তবুও কিসের এত ভয়?
-সেই ছেলেবেলা থেকে যা ছুয়েছি সব ভেঙ্গে গেছে।
প্রকান্ড ইস্কুলবাড়ি কাচের চিমনির মত ঝড়ে ভেঙ্গে গেল।
একান্নবর্তীর দীর্ঘ দালান-বারান্দা ছেড়া কাগজের কুচি হয়ে গেল।
কচি হাতে রুয়ে রুয়ে সাজিয়ে ছিলাম এক উৎফুল্ল বাগান
কুরে কুরে খেয়ে গেছে লাল পিঁপড়ে,পোকাও মাকড়।
একটা পতাকা ছিল, আকাশের অদ্বিতীয় সুর্যের মতন
তর্কেও বিতর্কে তাও সাত আটটা টুকড় হয়ে গেল ।
গাঁয়ের নদীকে ছুঁয়ে কী ভুল করেছি
নদীর ব্রীজ কে ছুঁয়ে কী ভুল করেছি
কাগজ ও মুদ্রাযন্ত্র ছুয়ে আমি কি ভুল করেছি?
নন্দিনী!
তোমাকে যদি বাগান,পতাকা,ব্রীজ,কাগজের মতন হারাই?