Skip to content

বাংলা কবিতা

Bangla kobita, Bengali Poetry, বাংলা কবিতা, kobita, কবিতা, Bengali poems.

Menu
  • Home
  • বিখ্যাত বাঙ্গালী কবি
  • কবিতার বিষয়
  • বাঙালি তরুণ কবি
  • অনুবাদ কবিতা
  • আবৃত্তি
  • PDF Download
  • বাংলা পত্রিকা
  • ৫০+ ছড়া, ছোটদের ছড়া কবিতা, চিরায়িত বাংলা ছড়া
  • Bangla Romantic Love SMS
Menu

শেষ দিন – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (অনুপমার প্রেম-পর্ব-৬)

Posted on January 1, 2019March 6, 2020 by বাংলা কবিতা

আজ অনুপমার শেষ দিল। এ সংসারে সে আর থাকিবে না। জ্ঞান হইয়া অবধি সে সুখ পায় নাই। ছেলেবেলায় ভালবাসিয়াছিল বলিয়া নিজের শান্তি নিজে ঘুচাইয়াছিল; অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করিয়াছিল বলিয়া বিধাতা তাহাকে একতিলও সুখ দেন নাই। যাহাকে ভালবাসিত মনে করিত, তাহাকে পাইল না; যে ভালবাসিতে আসিয়াছিল, তাহাকে তাড়াইয়া দিল। পিতা নাই, মাতা নাই, দাঁড়াইবার স্থান নাই, স্ত্রীলোকের একমাত্র অবলম্বন সতীত্বের সুযশ, তাহাও ঈশ্বর কাড়িয়া লইতে বসিয়াছেন। তাই আর সে সংসারে থাকিবে না। বড় অভিমানে তাহার হৃদয় ফাটিয়া উঠিতেছে। নিস্তব্ধ নিদ্রিত কৌমুদী-রজনীতে খিড়কির দ্বার খুলিয়া, আবার—বার বার তিনবার—পুষ্করিণীর সেই পুরাতন সোপানে আসিয়া উপবেশন করিল। এবার অনুপমা চালাক হইয়াছে। আর বার সন্তরণ-শিক্ষাটা তাহাকে মরিতে দেয় নাই, এবার তাহা বিফল করিবার জন্য কাঁকে কলসী লইয়া আসিয়াছে। এবার পুষ্করিণীর কোথায় ডুবন-জল আছে, তাহা বাহির করিয়া লইবে—এবার নিশ্চয় ডুবিয়া মরিবে।

 মরিবার পূর্বে পৃথিবীকে বড় সুন্দর দেখায়। ঘড়বাড়ি, আকাশ, মেঘ, চন্দ্র, তারা, জল, ফুল, লতা, বৃক্ষ—সব সুন্দর হইয়া উঠে; যেদিকে চাও সেইদিকেই মনোরম বোধ হয়। সব যেন অঙ্গুলি তুলিয়া বলিতে থাকে, মরিও না, দেখ আমরা কত সুখে আছি—তুমিও সহ্য করিয়া থাক, একদিন সুখী হইবে। না হয় আমাদের কাছে এস, আমরা তোমাকে সুখী করিব; অনর্থক বিধাতৃদত্ত আত্মাকে নরকে নিক্ষেপ করিও না। মরিতে আসিয়াও মানুষ তাই অনেক সময় ফিরিয়া যায়। আবার যখন ফিরিয়া দেখে, জগতে তাহার একতিলও সুখ নাই, অসীম সংসারে দাঁড়াইবার একবিন্দু স্থান নাই, আপনার বলিতে একজনও নাই, তখন আবার মরিতে চাহে, কিন্তু পরক্ষণেই কে যেন ভিতর হইতে বলিতে থাকে, “ছি ছি! ফিরিয়া যাও—এমন কাজ করিও না। মরিলেই কি সকল দুঃখের অবসান হইল? কেমন করিয়া জানিলে ইহা অপেক্ষা আরও গভীর দুঃখে পতিত হইবে না?” মানুষ অমনি সঙ্কুচিত হইয়া পশ্চাতে হটিয়া দাঁড়ায়। অনুপমার কি এ-সব কথা মনে হইতেছিল না? কিন্তু অনুপমা তবুও মরিবে, কিছুতেই আর বাঁচিবে না।

 পিতার কথা মনে হইল, মাতার কথা মনে হইল, সঙ্গে সঙ্গে আর একজনের কথা মনে হইল। যাহার কথা মনে হইল, সে ললিত। যাহারা তাকে ভালবাসিত, তাহারা সকলেই একে একে চলিয়া গিয়াছে। শুধু একজন এখনও জীবিত আছে। সে ভালবাসিয়াছিল, ভালবাসা পাইতে আসিয়াছিল, হৃদয়ের দেবী বলিয়া পূজা দিতে আসিয়াছিল, অনুপমা সে পূজা গ্রহণ করে নাই এবং অপমানিত করিয়া তাড়াইয়া দিয়াছিল।

 শুধু কি তাই? জেলে পর্যন্ত দিয়াছিল। ললিত সেখানে কত ক্লেশ পাইয়াছিল, হয়ত অনুপমাকে কত অভিসম্পাত করিয়াছিল, তাহার মনে হইল, নিশ্চিত সেই পাপেই এত ক্লেশ, এত যন্ত্রণা। সে ফিরিয়া আসিয়াছে। ভাল হইয়াছে, মদ ছাড়িয়াছে, দেশের উপকার করিয়া আবার যশ কিনিতেছে। সে কি আজও তাহাকে মনে করে? হয়ত করে না, হয়ত বা করে—কিন্তু তাহাতে কি? তাহার যে কলঙ্ক রটিয়াছে তিনি কি তাহা শুনিয়াছেন? যখন গ্রামময় রটিবে যে, আমি কলঙ্কিনী হইয়া ডুবিয়াছি, কাল যখন আমার দেহ জলের উপর ভাসিয়া উঠিবে, ছি ছি! কত ঘৃণায় তার ওষ্ঠ কুঞ্চিত হইয়া উঠিবে।

 অনুপমা অঞ্চল দিয়া গলদেশে কলসী বাঁধিল। এমন সময়ে কে একজন পশ্চাৎ হইতে ডাকিল, “অনুপমা!”

 অনুপমা চমকাইয়া ফিরিয়া দেখিল, একজন দীর্ঘাকৃতি পুরুষ স্থির হইয়া দাঁড়াইয়া আছে। আগন্তুক আবার ডাকিল। অনুপমার মনে হইল, এ স্বর আর কোথাও শুনিয়াছে, কিন্তু স্মরণ করিতে পারিল না। চুপ করিয়া রহিল।

 “অনুপমা আত্মহত্যা ক’রো না।”

 অনুপমা কোনও কালেই ব্রীড়ানত লজ্জাবতী লতা নহে; সে সাহস করিয়া বলিল, “আমি আত্মহত্যা করব, আপনি কি করে জানলেন?”

 “তবে গলায় কলসী বেঁধেচ কেন?”

 অনুপমা মৌন হইয়া রহিল। আগন্তুক ঈষৎ হাসিয়া বলিল, “আত্মঘাতী হলে কি হয় জান?”

 “কি?”

 “অনন্ত নরক।”

 অনুপমা শিহরিয়া উঠিল। ধীরে ধীরে কলসী খুলিয়া রাখিয়া বলিল, “এ সংসারে স্থান নাই।”

 “ভুলে গিয়েচ! আমি মনে করে দিচ্চি। প্রায় ছ’বছর পূর্বে ঠিক এইখানে একজন তোমাকে চিরজীবনের জন্য স্থান দিতে চেয়েছিল—স্মরণ হয়?”

 অনুপমা লজ্জায় রক্তমুখী হইয়া বলিল, “হয়।”

 “এ সঙ্কল্প ত্যাগ কর।”

 “আমার কলঙ্ক রটেছে—আমার বাঁচা হয় না।”

 “মরলেই কি কলঙ্ক যায়?”

 “যাক না যাক, আমি তা শুনতে যাব না।

 “ভুল বুঝেছ অনুপমা! মরলে এ কলঙ্ক চিরকাল ছায়ার মত তোমার নামের পাশে ঘুরে বেড়াবে। বেঁচে দেখ, এ মিথ্যা কলঙ্ক কখনও চিরস্থায়ী হবে না।”

 “কিন্তু কোথায় গিয়ে বেঁচে থাকব?”

 “আমার সঙ্গে চল!”

 অনুপমার একবার মনে হইল তাহাই করিবে। চরণে লুটাইয়া পড়িবে, বলিবে, আমাকে ক্ষমা কর। বলিবে, তোমার অনেক অর্থ, আমাকে কিছু ভিক্ষা দাও—আমি গিয়া কোথাও লুকাইয়া থাকি। পরে অনেকক্ষণ মৌন থাকিয়া ভাবিয়া চিন্তিয়া বলিল, “আমি যাব না।”

 কথা শেষ হইতে না হইতে অনুপমা জলে ঝাঁপাইয়া পড়িল।

 অনুপমার জ্ঞান হইলে দেখিল সুসজ্জিত হর্ম্যে পালঙ্কের উপর সে শয়ন করিয়া আছে, পার্শ্বে ললিতমোহন। অনুপমা চক্ষুরুন্মীলন করিয়া কাতরস্বরে বলিল, “কেন আমাকে বাঁচালে?”

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • গল্প (প্রেম ভালোবাসার ছোট গল্প)
  • পিডিএফ বই ডাউনলোড
  • অনুবাদ কবিতা
  • আবৃত্তি
  • অতুলপ্রসাদ সেন
  • অন্নদাশঙ্কর রায়
  • অমিয় চক্রবর্তী
  • অরুণ মিত্র
  • আ. ন. ম. বজলুর রশীদ
  • আনিসুল হক
  • আবদুল গাফফার চৌধুরী
  • আবদুল হাকিম
  • আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ
  • আবুল হাসান
  • আবুল হোসেন
  • আরণ্যক বসু
  • আল মাহমুদ
  • আলাউদ্দিন আল আজাদ
  • আলাওল
  • আসাদ চৌধুরী
  • আহসান হাবীব
  • ইসমাইল হোসেন সিরাজী
  • ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত
  • কাজী কাদের নেওয়াজ
  • কাজী নজরুল ইসলাম
  • কামিনী রায়
  • কায়কোবাদ
  • কালীপ্রসন্ন ঘোষ
  • কুসুম কুমারী দাশ
  • খান মুহম্মদ মঈনুদ্দিন
  • গগন হরকরা
  • গোবিন্দচন্দ্র দাস
  • অনুপ্রেরণামূলক কবিতা
  • ইসলামিক কবিতা
  • উপদেশমূলক কবিতা
  • একুশের কবিতা
  • কষ্টের কবিতা
  • ছোটদের ছড়া কবিতা
  • জন্মদিনের কবিতা
  • দুঃখের কবিতা
  • দেশের কবিতা
  • নারীকে নিয়ে কবিতা
  • নীতি কবিতা
  • পহেলা ফাল্গুনের কবিতা
  • প্রকৃতির কবিতা
  • প্রেমের কবিতা
  • বসন্তের কবিতা
  • বিদ্রোহী কবিতা
  • বিরহের কবিতা
  • বৃষ্টির কবিতা
  • গোলাম মোস্তফা
  • চণ্ডীদাস
  • চন্দ্রাবতী
  • জয় গোস্বামী
  • জসীম উদ্‌দীন
  • জীবনানন্দ দাশ
  • তসলিমা নাসরিন
  • তারাপদ রায়
  • দেবব্রত সিংহ
  • নবকৃষ্ণ ভট্টাচার্য
  • নবারুণ ভট্টাচার্য
  • নির্মলেন্দু গুণ
  • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
  • পূর্ণেন্দু পত্রী
  • প্রেমেন্দ্র মিত্র
  • ফররুখ আহমদ
  • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
  • বন্দে আলী মিঞা
  • বিনয় মজুমদার
  • বিষ্ণু দে
  • বুদ্ধদেব বসু
  • ছোট গল্প
  • নাজিম হিকমত
  • পাবলো নেরুদা
  • বৈশাখের কবিতা
  • ভালোবাসার কবিতা
  • মাকে নিয়ে কবিতা
  • মুক্তিযুদ্ধের কবিতা
  • মে দিবসের কবিতা
  • যুদ্ধের কবিতা
  • রম্য কবিতা
  • রাজনৈতিক কবিতা
  • রূপক কবিতা
  • রোমান্টিক কবিতা
  • শীতের কবিতা
  • শুভ নববর্ষের কবিতা
  • ভবানীপ্রসাদ মজুমদার
  • ভাস্কর চক্রবর্তী
  • মদনমোহন তর্কালঙ্কার
  • মল্লিকা সেনগুপ্ত
  • মহাদেব সাহা
  • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
  • মাহবুবুল আলম চৌধুরী
  • মুকুন্দরাম চক্রবর্তী , কবিকঙ্কণ
  • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
  • যতীন্দ্রমোহন বাগচী
  • যোগীন্দ্রনাথ সরকার
  • রজনীকান্ত সেন
  • রফিক আজাদ
  • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
  • রাজিয়া খাতুন চৌধুরাণী
  • রামনিধি গুপ্ত (নিধু বাবু)
  • রুদ্র গোস্বামী
  • রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
  • রোকনুজ্জামান খান
  • লালন ফকির
  • শক্তি চট্টোপাধ্যায়
  • শঙ্খ ঘোষ
  • শহীদ কাদরী
  • শামসুর রাহমান
  • শাহ মুহম্মদ সগীর
  • শিবরাম চক্রবর্তী
  • শুভ দাশগুপ্ত
  • শেখ ফজলল করীম
  • শ্রীজাত
  • সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
  • সলিল চৌধুরী
  • ভালোবাসার গল্প
  • মোশতাক আহমেদ
  • রেদোয়ান মাসুদ
  • শেখ সাদী
  • সিকান্দার আবু জাফর
  • সুকান্ত ভট্টাচার্য
  • সুকুমার বড়ুয়া
  • সুকুমার রায়
  • সুনির্মল বসু
  • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
  • সুফিয়া কামাল
  • সুবোধ সরকার
  • সুভাষ মুখোপাধ্যায়
  • সৈয়দ শামসুল হক
  • হাসন রাজা
  • হুমায়ুন আজাদ
  • হুমায়ুন কবির
  • হুমায়ূন আহমেদ
  • হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়
  • হেলাল হাফিজ
  • স্বাধীনতার কবিতা
©2025 বাংলা কবিতা | Design: Newspaperly WordPress Theme