আল মাহমুদ

নারকেলের ঐ লম্বা মাথায় হঠাৎ দেখি কাল ডাবের মতো চাদঁ উঠেছে ঠান্ডা ও গোলগাল। ছিটকিনিটা আস্তে খুলে পেরিয়ে এলেম ঘর ঘুমন্ত এই মস্ত শহর করছিলো থরথ । মিনারটাকে দেখছি যেন দাড়িয়ে আছেন…

শেষ ট্রেন ধরবো বলে এক রকম ছুটতে ছুটতে স্টেশনে পৌঁছে দেখি নীলবর্ণ আলোর সংকেত। হতাশার মতোন হঠাৎ দারুণ হুইসেল দিয়ে গাড়ি ছেড়ে দিয়েছে। যাদের সাথে শহরে যাবার কথা ছিল তাদের উৎকণ্ঠিত মুখ…

এ কেমন অন্ধকার বঙ্গদেশ উত্থান রহিত নৈশব্দের মন্ত্রে যেন ডালে আর পাখিও বসে না। নদীগুলো দুঃখময়, নির্পতগ মাটিতে জন্মায় কেবল ব্যাঙের ছাতা, অন্যকোন শ্যামলতা নেই। বুঝি না, রবীন্দ্রনাথ কী ভেবে যে বাংলাদেশে…

শেষ হয়নি কি, আমাদের দেয়া-নেয়া? হাত তুলে আছে, পাড়ানি মেয়েটি বিদায়ের শেষ খেয়া, ডাকছে আমাকে হাঁকছে আমাকে আমিই শেষের লোক। শ্লোক শেষ হলো, অন্ত-মিলেরও শেষ। কাঁপছে নায়ের পাটাতন বুঝি ছেড়ে যেতে উৎসুক।…

কথা বলি আমি ঝরে যায় ঝরাপাতা হাওয়ায় উড়ছে তোমাদের হালখাতা। তোমাদের সাথে ব্যবধান চিরদিন হিসেব নিকেশ মেলে না তো কোনো দিন। সামনে কেবল খোলা আছে এক পথ এই পথে কবে চলে গেছে…

কবিতা বোঝে না এই বাংলার কেউ আর দেশের অগণ্য চাষী, চাপরাশী ডাক্তার উকিল মোক্তার পুলিস দারোগা ছাত্র অধ্যাপক সব কাব্যের ব্যাপারে নীরব! স্মাগলার আলোচক সম্পাদক তরুণীর দল কবিতা বোঝে না কোনো সঙ…

মেঘনা নদীর শান্ত মেয়ে তিতাসে মেঘের মত পাল উড়িয়ে কী ভাসে! মাছের মত দেখতে এ কোন পাটুনি ভর দুপুরে খাটছে সখের খাটুনি। ওমা এ-যে কাজল বিলের বোয়ালে পালের দড়ি আটকে আছে চোয়ালে…

ভয়ের ডানায় বাতাস লেগেছে মুখে শীতল সবুজ থরথর করে বুকে কাঁপছে আত্মা, আত্মার পাখি এক ‘ঝাপটানি তুলে নিজের কথাই লেখ’ পাখির কথায় পাখা মেললাম নীলে নীল এসে বুঝি আমাকেই ফেলে গিলে নীল…

বৃষ্টির ছাঁটে শিহরিত হয় দেহ কেউ বলে আমি কবি কি না সন্দেহ তবু তো কবিতা আমাকে ঘিরেই নাচে নাচুনে মেয়ের মতোই সেও কি বাঁচে? বৃষ্টির কণা ফণা ধরে আছে পথে পথ কই…

ঈদের দিনে জিদ ধরি না আর কানে আমার বাজে না সেই মায়ের অলঙ্কার। কেউ বলে না খাও পাতের ভেতর ঠাণ্ডা হলো কোর্মা ও পোলাও। কোথায় যেন মন চলে যায় মেঘের ওপর ভেসে…