Category: শামসুর রাহমান

জেনেছি কাকে চাই, কে এলে চোখে ফোটে নিমেষে শরতের খুশির জ্যোতিকণা; কাঁপি না ভয়ে আর দ্বিধার নেই দোলা এবার তবে রাতে হাজার দীপ জ্বেলে সাজাবো তার পথ যদি সে হেঁটে আসে। যদি…

এতকাল ছিলাম একা আর ব্যথিত, আহত পশুর অনুভবে ছেঁড়াখোঁড়া। দুর্গন্ধ-ভরা গুহাহিত রাত নিস্ফল ক্রোধে দীর্ণ, শীর্ণ হাহাকার ছাড়া গান ছিল না মনে, জানি প্রাণে ছিল না সতেজ পাতার কানাকানি এমনকি মরম্নভূমির তীব্রতাও…

দাউ দাউ পুড়ে যাচ্ছে নতুন বাজার। পুড়ছে দোকান-পাট, কাঠ, লোহা-লক্কড়ের স্তূপ, মসজিদ এবং মন্দির। দাউ দাউ পুড়ে যাচ্ছে নতুন বাজার। বিষম পুড়ছে চতুর্দিকে ঘর-বাড়ি। পুড়ছে টিয়ের খাঁচা, রবীন্দ্র রচনাবলি, মিষ্টান্ন ভাণ্ডার, মানচিত্র,…

জো, তুমি আমাকে চিনবে না। আমি তোমারই মতো একজন কালো মানুষ গলার সবচেয়ে উঁচু পর্দায় গাইছি সেতুবন্ধের গান, যে গানে তোমার দিলখোলা সুরও লাগছে। জো, যখন ওরা তোমার চামড়ায় জ্বালা-ধরানো সপাং সপাং…

কখনো আমার মাকে কোনো গান গাইতে শুনিনি। সেই কবে শিশু রাতে ঘুম পাড়ানিয়া গান গেয়ে আমাকে কখনো ঘুম পাড়াতেন কি না আজ মনেই পড়ে না। যখন শরীরে তার বসন্তের সম্ভার আসেনি, যখন…

লতাগুল্ম, বাঁশঝাড়, বাবুই পাখির বাসা আর মধুমতি নদীটির বুক থেকে বেদনাবিহ্বল ধ্বনি উঠে মেঘমালা ছুঁয়ে ব্যাপক ছড়িয়ে পড়ে সারা বাংলায়। এখন তো তিনি নেই, তবু সেই ধ্বনি আজ শুধু তাঁরই কথা বলে;…

নক্ষত্রপুঞ্জের মতো জলজ্বলে পতাকা উড়িয়ে আছো আমার সত্তায়। মমতা নামের প্রুত প্রদেশের শ্যামলিমা তোমাকে নিবিড় ঘিরে রয় সর্বদাই। কালো রাত পোহানোর পরের প্রহরে শিউলিশৈশবে ‘পাখী সব করে রব’ ব’লে মদনমোহন তর্কালঙ্কার কী…

বৃক্ষের নিকটে গিয়ে বলি ; দয়াবান বৃক্ষ তুমি একটি কবিতা দিতে পারো ? বৃক্ষ বলে আমার বাকল ফুঁড়ে আমার মজ্জায় যদি মিশে যেতে পারো, তবে হয়তো বা পেয়ে যাবে একটি কবিতা !…

ধন্য রাজা ধন্য, দেশজোড়া তার সৈন্য! পথে-ঘাটে-ভেড়ার পাল। চাষীর গরু, মাঝির হাল, ঘটি-বাটি, গামছা, হাঁড়ি, সাত-মহলা আছে বাড়ি, আছে হাতি, আছে ঘোড়া। কেবল পোড়া মুখে পোরার দুমুঠো নেই অন্ন, ধন্য রাজা ধন্য।…