স্নান করে উঠে কতক্ষণ ঘাটে বসে আছে এক উন্মাদ মহিলা মন্দিরের পিছনে পুরনো বটগাছ। ঝুরি। ফাটধরা রোয়াকে কুকুর। অনেক বছর আগে রথের বিকেলে নৌকো থেকে ঝাঁপ দিয়ে আর ওঠেনি যে-দস্যি ছেলেটা এতক্ষণে, জল থেকে সে ওঠে, দৌড় মারে, ঝুরি ধরে খুব দোল খায় সারা গা শ্যাওলায় ভরা, একটা চোখ মাছে ...
Read More »ভালোবাসার সংজ্ঞা – রফিক আজাদ
ভালোবাসা মানে দুজনের পাগলামি, পরস্পরকে হৃদয়ের কাছে টানা; ভালোবাসা মানে জীবনের ঝুঁকি নেয়া, বিরহ-বালুতে খালিপায়ে হাঁটাহাঁটি; ভালোবাসা মানে একে অপরের প্রতি খুব করে ঝুঁকে থাকা; ভালোবাসা মানে ব্যাপক বৃষ্টি, বৃষ্টির একটানা ভিতরে-বাহিরে দুজনের হেঁটে যাওয়া; ভালোবাসা মানে ঠাণ্ডা কফির পেয়ালা সামনে অবিরল কথা বলা; ভালোবাসা মানে শেষ হয়ে-যাওয়া কথার পরেও ...
Read More »যদি ভালবাসা পাই – রফিক আজাদ
যদি ভালবাসা পাই আবার শুধরে নেব জীবনের ভুলগুলি যদি ভালবাসা পাই ব্যাপক দীর্ঘপথে তুলে নেব ঝোলাঝুলি যদি ভালবাসা পাই শীতের রাতের শেষে মখমল দিন পাব যদি ভালবাসা পাই পাহাড় ডিঙ্গাবো আর সমুদ্র সাঁতরাবো যদি ভালবাসা পাই আমার আকাশ হবে দ্রুত শরতের নীল যদি ভালবাসা পাই জীবনে আমিও পাব মধ্য অন্তমিল।
Read More »তোমার কথা ভেবে __রফিক আজাদ
তোমার কথা ভেবে রক্তে ঢেউ ওঠে— তোমাকে সর্বদা ভাবতে ভালো লাগে, আমার পথজুড়ে তোমারই আনাগোনা— তোমাকে মনে এলে রক্তে আজও ওঠে তুমুল তোলপাড় হূদয়ে সর্বদা… হলো না পাশাপাশি বিপুল পথ-হাঁটা, এমন কথা ছিল চলব দুজনেই জীবন-জোড়া পথ যে-পথ দিকহীন মিশেছে সম্মুখে আলোর গহ্বরে…।
Read More »প্রতীক্ষা – রফিক আজাদ
এমন অনেক দিন গেছে আমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থেকেছি, হেমন্তে পাতা-ঝরার শব্দ শুনবো ব’লে নিঃশব্দে অপেক্ষা করেছি বনভূমিতে- কোনো বন্ধুর জন্যে কিংবা অন্য অনেকের জন্যে হয়তো বা ভবিষ্যতেও অপেক্ষা করবো… এমন অনেক দিনই তো গেছে কারো অপেক্ষায় বাড়ি ব’সে আছি- হয়তো কেউ বলেছিলো, “অপেক্ষা ক’রো একসঙ্গে বেরুবো।” এক শনিবার রাতে ...
Read More »ভাত দে হারামজাদা – রফিক আজাদ
ভীষণ ক্ষুধার্ত আছিঃ উদরে, শরীরবৃত্ত ব্যেপে অনুভূত হতে থাকে- প্রতিপলে- সর্বগ্রাসী ক্ষুধা অনাবৃষ্টি- যেমন চৈত্রের শষ্যক্ষেত্রে- জ্বেলে দ্যায় প্রভুত দাহন- তেমনি ক্ষুধার জ্বালা, জ্বলে দেহ দু’বেলা দু’মুঠো পেলে মোটে নেই অন্য কোন দাবী অনেকে অনেক কিছু চেয়ে নিচ্ছে, সকলেই চায়ঃ বাড়ি, গাড়ি, টাকা কড়ি- কারো বা খ্যাতির লোভ আছে আমার ...
Read More »যাও, পত্রদূত __রফিক আজাদ
যাও পত্রদূত, বোলো তার কানে-কানে মৃদু স্বরে সলজ্জ ভাষায় এই বার্তা: “কোমল পাথর, তুমি সুর্যাস্তের লাল আভা জড়িয়ে রয়েছো বরতনু; প্রকৃতি জানে না নিজে কতোটা সুন্দর বনভূমি।” যাও, বোলো তার কানে ভ্রমরসদৃশ গুঞ্জরণে, চোখের প্রশংসা কোরো, বোলো সুঠাম সুন্দর শরীরের প্রতি বাঁকে তার মরণ লুকিয়ে আছে, অন্য কেউ নয়, সে ...
Read More »চুনিয়া আমার আর্কেডিয়া __রফিক আজাদ
স্পর্শকাতরতাময় এই নাম উচ্চারণমাত্র যেন ভেঙে যাবে, অন্তর্হিত হবে তার প্রকৃত মহিমা,- চুনিয়া একটি গ্রাম, ছোট্ট কিন্তু ভেতরে-ভেতরে খুব শক্তিশালী মারণাস্ত্রময় সভ্যতার বিরুদ্ধে দাঁড়াবে। মধ্যরাতে চুনিয়া নীরব। চুনিয়া তো ভালোবাসে শান্তস্নিগ্ধ পূর্ণিমার চাঁদ, চুনিয়া প্রকৃত বৌদ্ধ-স্বভাবের নিরিবিলি সবুজ প্রকৃতি; চুনিয়া যোজনব্যাপী মনোরম আদিবাসী ভূমি। চুনিয়া কখনো কোনো হিংস্রতা দ্যাখেনি। চুনিয়া ...
Read More »নগর ধ্বংসের আগে __রফিক আজাদ
নগর বিধ্বস্ত হ’লে, ভেঙ্গে গেলে শেষতম ঘড়ি উলঙ্গ ও মৃতদের সুখে শুধু ঈর্ষা করা চলে। ‘জাহাজ, জাহাজ’ – ব’লে আর্তনাদ সকলেই করি – তবুও জাহাজ কোনো ভাসবে না এই পচা জলে। সমুদ্র অনেক দূর, নগরের ধারে-কাছে নেই : চারপাশে অগভীর অস্বচ্ছ মলিন জলরাশি। রক্ত-পুঁজে মাখামাখি আমাদের ভালবাসাবাসি; এখন পাবো না ...
Read More »নত হও, কুর্নিশ করো __রফিক আজাদ
হে কলম, উদ্ধত হ’য়ো না, নত হও, নত হতে শেখো, তোমার উদ্ধত আচরনে চেয়ে দ্যাখো, কী যে দু:খ পেয়েছেন ভদ্রমহোদয়গণ, অতএব, নত হও, বিনীত ভঙিতে করজোড়ে ক্ষমা চাও, পায়ে পড়ো, বলো: কদ্যপি এমনটি হবে না, স্যার, বলো: মধ্যবিত্ত হে বাঙালী ভদ্রমহোদয়গণ, এবারকার মতো ক্ষমা করে দিন… হে আমার প্রিয় বলপেন, ...
Read More »